নারীর সুগন্ধি/পারফিউম ব্যবহার নিয়ে ইসলাম কী বলে??
ইসলামে নারীদের জন্য পর্দার বিধান আর ইসলামে নারীদের জন্য সুগন্ধি ব্যবহারের বিধান পরস্পরের পরিপূরক অর্থ্যাৎ একই বিধান।)।।
নারীরা এমনভাবে সুগন্ধি ব্যবহার করবে যাতে ঐ সুগন্ধ কোন পরপুরুষ না পান। অর্থ্যাৎ একজন নারী শুধু তার স্বামীর জন্যই বাসায় সুগন্ধি ব্যবহার করতে পারবেন, তাছাড়া নয়। সুগন্ধি ব্যবহার করে বাসার বাইরে বের হলে (স্বামীর সাথে বাইরে বের হলেও) তা পরপুরুষ বুঝতে পারবে। তাহলে তো তার ইসলামী বিধান অনুযায়ী পর্দারর বিধান রক্ষা করা হলো না।
রাসুল (সাঃ) বলেছেন- “পুরুষেরা গন্ধ পাবে এমন উদ্দেশ্যে আতর বা সুগন্ধি মেখে কোন মহিলা যদি পুরুষদের মাঝে চলাফেরা করে তাহলে সে একজন যিনাকারী মহিলা হিসাবে গণ্য হবে” (আহমাদ ৪/৪১৮, ছহীহুল জামে হাদীছ ১০৫)।
পর্দার সাথে হলেও মহিলা পারফিউম বা সেন্ট জাতীয় কোন সুগন্ধি ব্যবহার করে বাইরে যেতে পারে না। কারণ তাতে ফিতনা আছে। মহানবী (সঃ) বলেছেন, “প্রত্যেক চক্ষুই ব্যাভিচারী। আর মহিলা যদি (কোন প্রকার) সুগন্ধি ব্যবহার করে কোন (পুরুষের)মজলিসের পাশ দিয়ে অতিক্রম করে, তবে সে ব্যভিচারিণী (বেশ্যার মেয়ে)।” ৫০৬ (আবূ দাঊদ, তিরমিযী, নাসাঈ, ইবনে হিব্বান, ইবনে খুযাইমাহ, হাকেম, সহীহুল জামে, ৪৫৪০ নং)
এমন কি মসজিদে নামায পড়ার উদ্দেশ্যে যেতেও সে সেন্ট ব্যবহার করতে পারে না। মহানবী (সঃ) বলেন, “আল্লাহ্র বান্দীদেরকে মসজিদে আসতে বারণ করো না, তবে তারা যেন খোশবূ ব্যবহার না করে সাধাসিধাভাবে আসে।” ৫০৭ (আহমাদ, আবূ দাঊদ, সঃ জামে ৭৪৫৭ নং)
“যে মহিলা সেন্ট ব্যবহার করে মসজিদে যাবে, সে মহিলার গোসল না করা পর্যন্ত কোন নামায কবুল হবে না।” ৫০৮ (ইবনে মাজাহ ৪০০২, সঃ জামে ২৭০৩ নং)
অনেক মহিলা তো এ ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন, আর অনেকেই তো এ বিষয়টিকে খুব হালকাভাবে গ্রহণ করে। যে সমস্ত নারীরা সেজেগুজে বিভিন্ন ধরনের সুগন্ধি মেখে ড্রাইভারের সাথে গাড়ীতে চলাফেরা করছে, দোকানে যাচ্ছে, স্কুল-কলেজ ও ইউনিভার্সিটিতে যাচ্ছে, তারা শরী’আতের নিষেধাজ্ঞার দিকে সামান্যতমও খেয়াল করে না। মেয়েদের ঘরের বাইরে যাওয়ার ব্যাপারে ইসলামী শরী‘আত এমন কঠোর বিধান আরোপ করেছে যে, বাড়ীর বাইরে যাওয়ার সময় মেয়েরা সুগন্ধি মেখে থাকলে ঐ সুগন্ধিকে নাপাকী মনে করে ফরয গোসলের ন্যায় ঐ মহিলাকে গোসল করতে হবে।
এক্ষেত্রে কোনো মেয়ের শরীর থেকে যদি কোনো দূর্গন্ধ প্রকাশিত হওয়ার সমস্যা থাকে সে ক্ষেত্রে সুগন্ধি ব্যবহার ছাড়া নিজেকে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে পারেন। প্রয়োজনে প্রতি ঘণ্টা অন্তর অন্তর নিজেকে পরিস্কার করে নিতে পারেন। সমস্যা খানিকটা জচিল হলে তিনি একজন চর্ম বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন এবং ডাক্তারের পরামর্শ মতো বৈধ কিছু ব্যবহার করতে পারেন।
আসলে আল-কোরআন কিংবা হাদীসের কোথাও বডি স্প্রের কথা উল্লেখ নেই। তবে বলা আছে নাপাক অবস্থায় নামাজ হবে না।
অর্থ্যাৎ পাক-পবিত্র হয়ে নামাজ আদায় করতে বলার নির্দেষনা আছে।
আর বর্তমান বাজারগুলোতে যেসব পারফিউম বা বডি স্প্রে পাওয়া যায় এগুলোর অধিকাংশটির মধ্যেই রয়েছে অ্যালকোহল। তবে অ্যালকোহলমুক্ত পারফিউমও পাওয়া যায়। তাই পারফিউম বা স্প্রে ব্যবহার করতে চাইলে এ্যালকোহলমুক্তগুলোই কিনতে হবে। কারণ এ্যালকোহলযুক্ত স্প্রে ব্যবহার করা অনুত্তম। কারণ মুসলমানদের মদ খাওয়া হারাম। আর মদে যেহেতু অ্যালকোহলের পরিমাণ বেশি থাকে। তাই অ্যালকোহলযু্ক্ত স্প্রে ব্যবহার করে নামাজ আদায় না করায় উত্তম।
No comments:
Post a Comment