ইসলামের পর্দা-বিধান ও আমাদের অসতর্কতা
-শামীমা বিনতে নূর
ইসলাম
আল্লাহ পাকের মনোনীত দ্বীন। জীবনের এমন কোনো অঙ্গন নেই, যেখানে ইসলামের
বিধান ও শিক্ষা নেই। সেই শিক্ষা ও বিধান যখন আমরা ভুলে যাই তখনই আমাদের উপর
বিপর্যয় নেমে আসে। আখেরাতের ভয়াবহ শাস্তি তো আছেই, দুনিয়ার জীবনও
বিপর্যস্ত হয়ে যায়।
সম্প্রতি
নারীনির্যাতন খুব বেড়ে গেছে, বিশেষত উঠতি বয়েসী মেয়েরা চরম
নিরাপত্তাহীনতার শিকার। এটা এ সমাজের চরম ব্যর্থতা যে, নিজেদের মা-বোনকেও
নিরাপত্তা দিতে পারছে না। এ অবস্থায় মা-বোনদেরকে গভীরভাবে ভাবতে হবে
নিজেদের নিরাপত্তা সম্পর্কে। অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন প্রয়োজন অনেক
বেশি সতর্কতা ও সচেতনতার। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক সত্য এই যে, বিপর্যয়ের সাথে
পাল্লা দিয়েই যেন বেড়ে চলেছে আমাদের অবহেলা ও অসচেতনতা। বর্তমান নিবন্ধে
চলমান সমাজচিত্রের কিছু অংশ ও আমাদের অবহেলার কিছু দিক পাঠকের সামনে তুলে
ধরতে চাই।
এক.
আমার
প্রতিবেশী একজন শিক্ষক। তাঁর কাছে পড়তে আসে অনেক ছেলেমেয়ে। ছোট ছোট
মেয়েরা যেমন আসে তেমনি আসে উঠতি বয়সের কিশোরীরাও। ওদের অনেকেরই পোশাক এমন
যে, আমি বিষণ্ণ বোধ করি। আমি ভাবি ওদের মায়েদের কথা। তাঁরা কীভাবে তাদের
মেয়েদেরকে পুরুষ শিক্ষকের কাছে পাঠান, উপরন্তু এমন পোশাকে? তাঁদের যদি
আখেরাতের ভয় না থাকে, দুর্ঘটনার ভয়ও কি নেই? এই তো কদিন আগে ভিকারুন্নিসা
নুন স্কুলের ঘটনাটি নিয়ে পত্রপত্রিকায় তোলপাড় হল। এর আগেও এরকম ঘটনা
পত্রিকার পাতায় এসেছে। অনেক পিতামাতাই হয়তো উদ্বিগ্ন, কিন্তু সম্ভবত তারা
ভাবছেন, এছাড়া তাদের কোনো উপায় নেই। তাই সর্বোচ্চ ঝুঁকির মুখেও
মেয়েদেরকে এই শিক্ষাটাই দিচ্ছেন এবং এই পদ্ধতিতেই দিচ্ছেন। কিন্তু সত্যিই
কি উপায় নেই? সত্যিই কি এর কোনো বিকল্প নেই? সেই উপায় ও বিকল্প খুঁজে বের
করাই এখন সময়ের দাবি।
দুই.
আল্লাহ
পাক কুরআন শরীফে বলেছেন-(তরজমা) ঈমানদাররা! ইসলামে প্রবেশ কর পরিপূর্ণভাবে
আর অনুসরণ করো না শয়তানের পদাঙ্ক; নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য দুশমন।
কোরআন
শরীফের এই আয়াতটি মনে পড়েছে আমার একজন আত্মীয়াকে দেখে। নিজের মহলে তিনি
যথেষ্ট দ্বীনদার। নামায-রোযা ও দান-খয়রাতে তাঁর সুনাম আছে। এলাকার অনেক
মেয়েকে তিনি বোরকা দিয়েছেন এবং তারা পর্দা মেনে চলতে শুরু করেছে। নিজের
মেয়েদেরকেও বোরকায় অভ্যস্ত করেছেন, তবে অনেক ইংরেজি শিক্ষিত দ্বীনদারের
মতো তাদের পড়িয়েছেন কলেজ-ভার্সিটিতে। তিনি হয়তো চিন্তাও করেননি যে,
মেয়ের কারণে তার নিজের দ্বীনদারীও আক্রান্ত হতে পারে।
সহশিক্ষার
উন্মুক্ত পরিবেশে অনেক ক্ষেত্রেই যা হয় তার সন্তানের ক্ষেত্রেও তা-ই
হয়েছে। একটি দ্বীনহীন পরিবারের ছেলের সাথে মেয়েটির সম্পর্ক হয়েছে। তাদের
বিয়ের অনুষ্ঠানের অবস্থা যা শুনেছি তা এখানে উল্লেখ করা সম্ভব নয়। শুধু
এটুকু বলি, ঐ অনুষ্ঠানেই তাঁকে শুনতে হয়েছে পর্দা ও বোরকা সম্পর্কে
বেয়াই-বেয়াইনের অনেক বিদ্রুপাত্মক কথাবার্তা।
এখানে
সম্ভবত পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ করার একটি দিক স্পষ্ট হয়েছে। আমি
নামায পড়ি, রোযা রাখি, কিন্তু জাহেলিয়াতের মোহ ত্যাগ করতে পারি না,
সন্তান-সন্ততিকে বানাতে চাই ‘প্রগতিশীল মুসলিম’
তাহলে আমি পরিপূর্ণভাবে ইসলামে ঢুকিনি। আমি পূর্ণাঙ্গ মুসলিম তখনই হতে
পারব যখন বিশ্বাস করব ইসলামকে পূর্ণাঙ্গ দ্বীন বলে এবং শিক্ষা-দীক্ষায়,
রুচি ও জীবনাচারে ইসলাম যা দিয়েছে তাকেই গ্রহণ করতে পারব সর্বোত্তম বলে।
আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো বলেছেন, ‘ঈমানের
লযযত ঐ ব্যক্তি পেয়েছে, যে আল্লাহকে রব হিসেবে পেয়ে ইসলামকে দ্বীন
হিসেবে পেয়ে এবং মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কে রাসূল
হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট হয়ে গেছে।’
তিন.
গায়রে মাহরাম পুরুষের সাথে নারীর পর্দা আছে। সাধারণত ‘গায়রে মাহরামে’র
অর্থ করা হয় বেগানা বা পরপুরুষ। এই তরজমা সূক্ষ্ম ও সঠিক নয়। কারণ অনেক
আত্মীয়ও এমন আছে যারা গায়রে মাহরাম, অর্থাৎ তাদের সাথে পর্দা করা জরুরি।
অনেকে অনাত্মীয়দের সাথে পর্দা করলেও গায়রে মাহরাম আত্মীয়দের সাথে পর্দা
করেন না। অথচ কোনো কোনো ক্ষেত্রে আত্মীয়দের মাধ্যমেই দুর্ঘটনার আশঙ্কা
বেশি থাকে। কিছু দিন আগে ভাসুরের হাতে ভ্রাতৃবধুর অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত্যুর
সংবাদ খবরের কাগজে প্রকাশিত হয়েছিল। আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম তো অনেক আগেই বলে গেছেন-আলহামভু আলমাওত’। অর্থাৎ স্বামী পক্ষীয় আত্মীয় তো মৃত্যু। এ কথাটি তিনি বলেছিলেন গায়রে মাহরাম আত্মীয়ের সাথে পর্দার অপরিহার্যতা বর্ণনা করে।
ভাসুর,
দেবর, চাচা শশুর, মামা শশুর, ভাসুরের ছেলে, দেবরের ছেলে, ননদের ছেলে,
স্বামীর খালু-ফুফা, খালাতো, মামাতো, চাচাতো, ফুফাতো ভাই, এদের সবার সাথে
পর্দা আছে। তেমনি নিজের খালু, ফুফা, খালাতো-ফুফাতো ভাই এবং মামাতো-চাচাতো
ভাইয়ের সাথেও পর্দা আছে। একজন পর্দানশীন নারীকে এ বিষয়ে সচেতন হওয়া এবং
দৃঢ়তার পরিচয় দেওয়া অপরিহার্য।
স্বামীর
কর্তব্য, এ বিষয়ে স্ত্রীকে সহযোগিতা করা। কারণ স্ত্রী অজ্ঞ বা অসচেতন হলে
তাকে সচেতন করা এবং পর্দায় অভ্যস্থ করা ছিল স্বামীর কর্তব্য; তো স্ত্রী
যখন স্বেচ্ছায় পর্দা করতে আগ্রহী তখন তো একে আল্লাহর মহা নেয়ামত মনে করা
উচিত। বস্ত্তত এমন স্ত্রীই হচ্ছেন নবীজীর ‘আলমারআতুস সালিহা’ বা নেককার রমণী, যাকে তিনি ‘খাইরু মাতায়িদ দুনিয়া’ বা জগতের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ বলে অভিহিত করেছেন।
দ্বিতীয়
কথা হচ্ছে, মাহরাম পুরুষের মাঝেও স্তরভেদ আছে। সকল মাহরাম এক পর্যায়ের
নয়। উপরন্তু কোনো মাহরাম যদি ফাসিক হয় কিংবা তার আচার-আচরণ মার্জিত ও
শোভন না হয় তখন তো অনেক বেশি সতর্কতার প্রয়োজন। আল্লাহ পাক মানুষের
সৃষ্টিকর্তা, তিনি শরীয়ত দান করেছেন। মানুষ যা জানে না তিনি তা জানেন,
মানুষ যা বোঝে না তিনি তা বোঝেন। নামায-রোযার মতো হজ্বও একটি ফরয ইবাদত।
কিন্তু শরীয়তের বিধান হল ফাসিক মাহরামের সাথে নারী হজ্বে যেতে পারবে না।
সুতরাং মাহরাম হলেই আর কোনো সতর্কতার প্রয়োজন নেই এমন নয়। এখন তো অনেক
পরিবারে-আল্লাহ হেফাযত করুন-শশুরের মাধ্যমেও পুত্রবধুদের নির্যাতিত হওয়ার
কথা শোনা যায়। তেমনি কিছুদিন আগে পত্রিকায় এসেছিল শাশুড়ি-জামাই বিয়ে
এবং এ নিয়ে সালিশ-দরবারের একটি সংবাদ। এসব কথা লিখতে খারাপ লাগছে, কিন্তু
এগুলোই এখন বাস্তবতার অংশ। সুতরাং সচেতন না হয়ে উপায় নেই।
চার.
পর্দানশীন
নারীকেও কখনো কখনো পুরুষ চিকিৎসকের কাছে যেতে হয়। চিকিৎসকরা হচ্ছেন
আমাদের সমাজের অভিজাত শ্রেণী। তাদের মধ্যে যেমন বিনয়ী ও চরিত্রবান ব্যক্তি
আছেন, তেমনি কিছু ব্যতিক্রমও আছে, যার দৃষ্টান্ত মাঝে মাঝে পত্রিকার
পাতায় দেখা যায়।
আমরা
মুসলিম পর্দানশীন নারী। প্রথমেই আমরা খুঁজব একজন নারী চিকিৎসক। পুরোপুরি
পর্দানশীন চিকিৎসক পাওয়া তো মুশকিল, তবে পর্দানশীন নারীদের শ্রদ্ধা করেন,
অন্তত ভদ্রতা ও সৌজন্য রক্ষা করেন এমন নারী চিকিৎসক এখনও আছেন। তবে কষ্ট
করে তাঁদের খুঁজে নিতে হয়।
আমরা
প্রথমেই কেন যাব পুরুষ চিকিৎসকের কাছে? আমার স্বামী দাঁতের চিকিৎসার জন্য
একজন চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন। তিনি অবাক হয়ে দেখেছেন যে, সেখানে
সিরিয়াল নিয়ে বেশ কয়েকজন বোরকাপরা নারীও বসে আছেন। অথচ দাঁতের ভালো
চিকিৎসা করেন এমন নারী চিকিৎসক দুর্লভ নন।
দাঁতের
চিকিৎসায় রোগীকে দীর্ঘ সময় চিকিৎসকের নিকট-সান্নিধ্যে থাকতে হয়। এসময়
রোগিনীর প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টি হওয়াই স্বাভাবিক, বিশেষত তরুণী ও যুবতী
রোগিনীর ক্ষেত্রে এটা আরও সত্য।
মধ্য
প্রাচ্যের একটি দেশের একজন দাঁতের চিকিৎসকের কথা সেখানকার পত্র-পত্রিকায়
এসেছিল, যিনি প্রায় প্রতিটি রোগিনীর সাথেই অশোভন আচরণ করেছেন। এমনকি সেই
সব দৃশ্য গোপন ক্যামেরায় ধারণ করে তাদের অনেককে অবৈধ সম্পর্কেও বাধ্য
করেছেন।
আমাদের
দেশেও কি এ ধরনের ঘটনা ঘটছে না? তো আমরা যারা পর্দা মেনে চলি তাদের সাবধান
থাকা প্রয়োজন। একান্ত অপারগ অবস্থায় যদি পুরুষ চিকিৎসকের কাছে যেতেই হয়
তাহলেও মাহরাম পুরুষকে সাথে নিয়ে চিকিৎসকের সামনে যাওয়া উচিত। কোনো
অবস্থাতেই একা যাওয়া উচিত নয়। হাদীস শরীফে কি বেগানা নারী-পুরুষের একান্ত
সাক্ষাতকে কঠিনভাবে নিষেধ করা হয়নি?
পাঁচ.
মোবাইল
ফোন এখন আমাদের অতি প্রয়োজনীয় জিনিস। একটি মোবাইল নেই এমন মানুষ এখন
খুঁজে পাওয়া কঠিন। মোবাইল ফোনের কারণে আত্মীয়-স্বজনের খোঁজখবর নেওয়া ও
প্রয়োজনীয় যোগাযোগ অনেক সহজ হয়েছে। এটা মোবাইলের সুফল। অন্যদিকে
যোগাযোগের ক্ষেত্রে শরীয়তের বিধান মেনে না চলার কারণে মোবাইলের মাধ্যমে
অনেক দুর্ঘটনাও ঘটছে। আমাদের জানাশোনার মধ্যে ঘটে যাওয়া একটা ঘটনার
সারসংক্ষেপ হল, এক ভদ্র পরিবারের পুত্রবধু, যার স্বামী মধ্যপ্রাচ্যের একটি
দেশে কর্মরত। স্বামীর সাথে কথা বলার জন্য তার কাছে একটি ফোন ছিল। সেই ফোনেই
মিসডকলের মাধ্যমে এক ব্যক্তির সাথে তার পরিচয় হল। একপর্যায়ে স্বামীর
সংসার ও নিজের তিনটি সন্তান রেখে মহিলাটি উধাও হয়ে গেল। এমন ঘটনা তো নতুন
নয় তবে পরিবারটি যেহেতু ভদ্র ও মোটামুটি ধার্মিক হিসেবে পরিচিত ছিল তাই
গ্রামে তোলপাড় শুরু হল এবং পঞ্চায়েত বৈঠকে সিদ্ধান্ত হল যে, এই গ্রামের
কোনো নারীর কাছে মোবাইল ফোন থাকতে পারবে না। যদি কারো কাছে মোবাইল ফোন
পাওয়া যায় তাহলে তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে ইত্যাদি ইত্যাদি।
মোবাইল
ফোন ব্যবহার করার বিষয়ে আমরা কিছু সতর্কতা রক্ষা করতে পারি। পরিচিত
আত্মীয়-স্বজনের নাম্বার সংরক্ষণ করে রাখতে পারি এবং অপরিচিত নাম্বার থেকে
ফোন এলে স্বামী বা অন্য কারো মাধ্যমে রিসিভ করাতে পারি। মহিলার কণ্ঠ শুনলেই
অনেকে অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা শুরু করে দেয় সেগুলোর জবাব না দিয়ে চুপচাপ
মোবাইল বন্ধ করে দেওয়া উচিত। আর প্রয়োজনে গায়রে মাহরাম পুরুষের সাথে
কথা বলতে হলে কুরআনের বিধান অনুযায়ী অনাকর্ষণীয় কণ্ঠে কথা বলা উচিত।
ছয়.
আমাদের
দেশের মানুষ সাধারণত পীরভক্ত। ভক্তি-শ্রদ্ধা যদি সঠিক মাত্রায় হয় এবং
সঠিক পাত্রে হয় তাহলে দোষের কিছু নেই। হক্কানী পীর-মাশায়েখ মানুষকে
তাকওয়া-পরহেযগারী শিক্ষা দেন এবং আত্মশুদ্ধির দীক্ষা দেন, সর্বোপরি তাঁরা
মানুষকে কুরআন-সুন্নাহর পথে পরিচালিত করেন। তাই আল্লাহওয়ালা বুযুর্গের
সাথে ইসলাহ ও সংশোধনের সম্পর্ক রাখা ফায়েদাজনক। তবে চকচকে সবকিছুই যেমন
সোনা নয় তেমনি পীর নামধারী ব্যক্তিমাত্রই আল্লাহওয়ালা নয়। সবকিছুর মতো
এখানেও ভেজাল আছে। কিছু প্রতারক আছে, যারা নিজেদেরকে পীর নামে পরিচয় দেয়
এবং নারী-পুরুষের সকল সমস্যার সমাধানের গ্যারান্টি দেয়। বলাবাহুল্য, এরা ‘পীর’
নয়। এদের একটি বড় পরিচয় এরা পর্দা করে না। সকল বয়েসের নারী অবাধে এদের
কাছে যায় আর ওরাও নানারকম তেলেসমাতি দেখিয়ে মেয়েদেরকে ফাঁদে ফেলে।
বন্ধ্যাত্ব থেকে শুরু করে কত শত রোগের যে তারা সমাধান দেয় তার ইয়ত্তা
নেই!
এই পর্দাহীনতার সপক্ষে তারা নানা রকম ‘ব্যাখ্যা’ও দিয়ে থাকে। যেমন কেউ বলে, ‘পীর হচ্ছে রূহানী পিতা, সুতরাং তার সাথে পর্দা কেন?’ কেউ বলে, ‘ভিতরের পর্দাই বড় পর্দা, বাইরের পর্দার প্রয়োজন কী?’
কিন্তু মনে রাখতে হবে, সকল পীরের বড় পীর কোরআন মজীদ; সকল মুরশিদের বড়
মুরশিদ নবীর সুন্নাহ। সুতরাং কোরআন-সুন্নাহর বিপরীতে কোনো পীরের পীরালি
গ্রহণযোগ্য নয়।
তো
যারা নিজেদের দ্বীন ও ঈমান রক্ষায় আগ্রহী তাদেরকে এ সকল ভন্ড প্রতারকদের
কাছ থেকে অবশ্যই দূরে থাকতে হবে। পর্দা হচ্ছে কুরআনের অকাট্য বিধান। এই
বিধান লঙ্ঘনকারী-সে যে পরিচয়ই ধারণ করুক-কোনোভাবেই আল্লাহর খাস বান্দা হতে
পারে না।
শেষকথা
এই
সংক্ষিপ্ত নিবন্ধে অসতর্কতার কিছু ক্ষেত্র নিয়ে আলোচনা করা হল। চিন্তা
করলে দেখা যাবে, এ ধরনের আরো অনেক ক্ষেত্র আছে যেখানে পর্দার বিষয়ে
অসর্তকতা প্রদর্শন করা হয়। আমাদের কর্তব্য, ঐ সকল ক্ষেত্রে সতর্ক হওয়া
এবং পুরোপুরিভাবে পর্দা মেনে চলার চেষ্টা করা। একমাত্র আল্লাহর বিধানেই
রয়েছে আমাদের শান্তি ও নিরাপত্তা। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে হেফাযত করুন এবং
তাওফীক দান করুন। আমীন।
No comments:
Post a Comment