Thursday, May 22, 2014

হিজাব পরিধান করেই সামনে এগিয়ে যাচ্ছে মার্কিন মেয়েরা

হিজাব পরিধান করেই সামনে এগিয়ে যাচ্ছে মার্কিন মেয়েরা
 
অন্যান্য মুসলিম মহিলা ও বালিকাদের সাথে পবিত্র জুম্মার নামায আদায়ের পর হ্মিত হাস্যে সারা উদ্দিন জানান, কালো হিজাবের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে পেরে তিনি আনন্দিত। এখন সময় হচ্ছে সামনে এগিয়ে যাওয়ার এবং হিজাব সম্পর্কে যে কোনো ধরনের ভুল ধারণা ও প্রশ্নের জবাব দেয়ার। যার জন্য সারা সর্বদাই প্রস্তুত।
ইসলাম অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘হিজাব পরিধান করেই আমি হিজাব সম্পর্কে সব ভুল ধারণাকে পরাজিত করতে চাই এবং যেভাবে প্রশ্ন তোলা হয় সেভাবেই এর জবাব দিতে হবে। ২২ বছর বয়স্কা সারা প্রায় ৪ বছর ধরে হিজাব পরিধান করছেন।

তিনি আরো বলেন, আমি যখন ক্যালিফোর্নিয়ার সানদিয়াগোর একটি হাইস্কুলে পড়ি তখন থেকেই আমি হিজাব পরিধান করি, যা ছিল আমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্রের ঐ এলাকা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বসবাস এবং যারা বিভিন্ন ধর্ম ও সংস্কৃতির অনুসারী। কিশ্চু আমি যখন ওয়াশিংটনে ফিরে আসি তখন অমুসলিম সম্প্রদায়ের এক দম্পতির দৃষ্টি পড়ে আমার প্রতি। আমি বুঝতে পারি তারা আমাকে সমান দৃষ্টিতে দেখে না।
সারা বলেন, ‘‘যদিও হিজাবের কারণে তিনি এখনও প্রকৃত হামলার শিকার হননি কিশ্চু কখনও কখনও নেতিবাচক পরিন্সিতির সম্মুখীন হয়েছেন।’’ তিনি বলেন, আমার মনে হয় এটা আমার জন্য ভালই হয়েছে। কারণ, আমি যখন কোনো বিরূপ মশ্চব্য শুনেছি তখন আমি এর ব্যাখ্যা তুলে ধরতে পেরেছি যে, আমি কে এবং আমি কেন এটা করেছি।
হিজাব হচ্ছে ইসলামের বাধ্যতামূলক পোশাক। এটা কোনো ধর্মীয় প্রতীক নয়। ব্যাংকে কর্মরত সারা আন্সার সাথে বলেন, ‘‘আমি একজন আমেরিকান, আমার জন্ম এখানে এবং এখানে আমার অনেক বন্ধু-বান্ধব রয়েছে।’’ তিনি আরো বলেন, আমি একজন মুসলিম এবং এটা হচ্ছে ইসলামের বিধান, যা আমি অনুসরণ করি। সরকারিভাবে কোনো হিজাব না থাকলেও বর্তমানে আমেরিকায় ৮০ লাখের মতো মুসলমানের বসবাস।
২৪ বছর বয়স্কা আমিনা সালেহর জীবনের সফলতার ক্ষেত্রে হিজাব কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারেনি। তিনি বলেন, ‘‘আমি এখন জনহ্নান্স্য বিভাগে কর্মরত। প্রতিদিনই আমি বিপুল সংখ্যক লোকের সাথে ওঠাবসা করি। আমি কখনই অনুভব করিনি যে, হিজাব তাদের চোখে আমাকে কম যোগ্যতাসম্পন্ন বিবেচনা করে।
পিতামাতা এবং দুই বোনের সাথে মেরিল্যান্ডে বসবাস করেন আমিনা। এখন থেকে ১৩ বছর আগে তার পরিবারের সাথে যুক্তরাষ্ট্রে আসেন তখন তিনি হিজাব পড়তেন না। ২০ বছর বয়সে তিনি হিজাব পড়া শুরু করেন। তিনি মনে করেন না যে এ কারণে লোকেরা তার সাথে ভিন্ন রকম আচরণ করে।
কিশ্চু ভার্জিনিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় শহর হার্ডনের বাসিন্দা জেসমিন উল্লাহর ধারণা হিজাবের ব্যাপারে আমেরিকায় অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে এবং এর বিরুহ্নে সংগ্রাম করা কখনও কখনও বেশ কঠিন।
১৬ বছর বয়স্ক জেসমিন বলেন, আপনি যখন প্রথম কোনো কক্ষে প্রবেশ করবেন তখন তারা চাইবে না আপনি স্পষ্টবাদী হন। তারা মনে মনে ভাবে আপনি এটা চান না। তারা আপনাকে একেবারেই দাসীর মতো মনে করে। যার কোনো মতামত দেয়ার অধিকার নেই।
কলেজে পড়াশোনার সাথে সাথে আরো দু'টি খন্ডকালীন চাকরি করেন জেসমিন। গর্বের সাথে তিনি বলেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যখন লোকজন তাকে চিনতে পারে তখন বুঝতে পারে সে হিজাব তার ব্যক্তিত্ব প্রকাশে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে না।

আমি চাই না যে, তারা আমাকে অহ্নাভাবিক হিসেবে বিবেচনা করুক। আমি চাই তারা আমাকে হিজাব পরিহিত অবন্সায় হ্নাভাবিক মানুষ হিসেবে বিবেচনা করবে। ১১ বছর বয়স থেকে হিজাবধারী জেসমিন মনে করেন অনেক বাধা থাকলেও আমেরিকান মুসলিম মহিলাদের হিজাব পরিধান করার প্রবণতা রোধ করতে পারবে না।
৯/১১-এর পর আগের তুলনায় আমেরিকা আরো বেশি বিভ্রাশ্চ হচ্ছে।
কোনো কোনো সময় হিজাব আমেরিকান মুসলিম মহিলা ও বালিকাদের সমাজে নানা চ্যালেঞ্জের মুখে ঠেলে দেয় বলেও হ্নীকার করেন ব্যাংকার সারা। তিনি অত্যাশ্চ দৃঢ়তার সাথে বলেন, ‘‘আমার মনে এ ব্যাপারে আরো সুযোগ উন্মুক্ত থাকা দরকার এবং সাধারণভাবে আলোচনা করা উচিত। পরিন্সিতি যত কঠিন হোক না কেন, আমি এটা অব্যাহত রাখবো।
বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত জেসমিন বলেন, মুসলিম মহিলা ও বালিকাদের সকল প্রতিবন্ধকতা ডিঙ্গিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা উচিত।
উদাহরণহ্নরূপ ‘‘আমি সাঁতার কাটতে পছন্দ করি এবং এটা প্রমাণ করা কঠিন হতে পারে। কিশ্চু এ জন্য আমার হিজাব বাধা সৃষ্টি করতে পারে না। এটা আমাকে একটি সৃষ্টিশীল পথ খুঁজে বের করতে উৎসাহ দিতে পারে। যাতে করে হিজাব পরেই আমি আমার পছন্দের কাজটি করতে পারি।
জেসমিন মনে করেন কোনো হিজাব পরিহিতা বালিকা কি করবেন সেটা তার নিজের ব্যাপার।
তিনি বলেন, ‘‘আপনি যদি কোনো রাজনৈতিক কর্মী হন তাহলে আপনার মতামত ব্যক্ত করার ক্ষেত্রে কোনো ভয় পাবেন না। আপনি যদি একজন ক্রীড়াবিদ হন তাহলে এগিয়ে যান সামনের দিকে। যদি আপনি ছাত্র হন তাহলে আপনার উচিত সেখানে ভালো ভূমিকা রাখা।
‘‘মহান আল্লাহ চান না ভালো কাজগুলো আমরা পরিত্যাগ করি।’’
-ইসলাম অনলাইন অবলম্বনে মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম

No comments:

Post a Comment