আজ পবিত্র শবে মেরাজ
আজ
মহিমান্বিত মোবারক রজনী মেরাজ। যাহা কখনও কেহ কল্পনাই করিতে সক্ষম হয়
নাই, আল্লাহ্ সুবাহানাহু ওয়াতায়ালা তাহাই জগদ্বাসিকে দেখাইয়াছেন। হযরত
মুহাম্মদ (স.) এর নবুওয়াতের একাদশ বত্সরের রজব মাসের ২৬ তারিখ দিবাগত
রাত্রে আশ্বর্যজনক এই মেরাজ সংঘটিত হইয়াছিল। কোরআন শরীফের সূরা বাণী
ইসরাঈল এর প্রথম আয়াতে এ প্রসঙ্গে এরশাদ হইয়াছে- "সুবহানাল্লাজি আস্রা
বিআবদিহি লাইলাম মিনাল মাসিজদিল হারামী ইলাল মাসিজদিল আক্সা" অর্থাত্-
পবিত্র সেই মহান সত্তা, যিনি তাঁহার এক বান্দা (মুহাম্মদ স.) কে মসজিদে
হারাম (কাবাঘর) হইতে মসজিদে আক্সা (বাইতুল মোকাদ্দাস) পর্যন্ত পরিভ্রমণ
করাইয়াছেন। ইহার মধ্যে তাঁহাকে অসংখ্য নিদর্শনাবলী দেখান হইয়াছে।
সেই সময় রসূল (স.) তাঁহার চাচাতো বোন উম্মে হানীর গৃহে নিন্দ্রা ও জাগ্রত অবস্থার মাঝামাঝি পর্যায়ে ছিলেন। তখন তাঁহার একপাশে নিদ্রিত ছিলেন চাচাতো ভাই জাফর, অন্য পাশে ঘুমাইয়াছিলেন প্রাণ প্রিয় চাচা আমীর হামযা (রা.)। এই সময়ে জিব্রাইল (আ.) আসিলেন। বেহেশতি বাহন বোরাকে আরোহণপূর্বক কাবাঘর হইতে তাঁহাকে লইয়া গেলেন মসজিদে আক্সায়। ইহার পর ঊর্ধ্বলোকে যাত্রা করিলেন। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির সীমা ভেদ করিয়া মহাশূন্যালোকের সব স্তর অতিক্রম করিয়া প্রথম আসমানের দরজায় পৌঁছাইলেন। প্রথম আসমানে আল্লাহর প্রিয় সৃষ্টি, প্রথম মানব আবুল বাশার, মানব জাতির পিতা হযরত আদম (আ.) এর সঙ্গে তাঁহার সাক্ষাত্ হইল। ইহার পর দ্বিতীয় আসমানে হযরত ঈসা (আ.) এর সঙ্গে সাক্ষাত্ হইল। তৃতীয় আসমানে হযরত হারুন (আ.) এর সঙ্গে সাক্ষাত্ হইলো। এই ভাবে চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম আসমানে যথাক্রমে হযরত ইউসূফ (আ.), হযরত ইদ্রিস (আ.), হযরত মূসা (আ.) ও হযরত ইব্রাহিম (আ.) এর সঙ্গে সাক্ষাত্ হইল। ইহার পর ফেরেশতাদের ইবাদতখানা বায়তুল মামুরে নামাজ পড়িলেন। ইহার পর সৃষ্টি জগতের সীমানা সিদরাতুল মুনতাহায় গিয়া জিব্রাইল (আ.) তাহাকে বিদায় জানাইলেন এবং বলিলেন এইস্থান হইতে একচুল পরিমাণ যদি আমি সম্মুখে অগ্রসর হই তাহা হইলে আল্লাহর নূরের তাজাল্লিতে আমি পুড়িয়া নিঃশেষ হইয়া যাইব। এমতাবস্থায় তাহার পদমোবারকের নিচে স্বর্গীয় বাহন, দ্রুতগতি সম্পন্ন, নরম তুলতুলে কম্বল আকৃতির রফ্রফ্ চলিয়া আসিল। রফ্রফিট হযরত মুহাম্মদ (স.)কে নিয়া দিগন্তবিস্তৃত সাতটি সমতল মাঠ পার হইয়া- আল্লাহর নূরের পর্দা ভেদ করিয়া সুমহান আরশে আজীমের সন্নিকটে গিয়া স্থির হইল। কুরআনুল কারীমের সূরা নজমে বলা হইয়াছে—"সুম্মা দানা ফাতাদাল্লা, ফাকানা কাবা কাওছাইনে আও আদনা" অর্থাত্- অতপর (রফ্রফিট) থামিয়া গেল, এবং ঝুলিয়া পড়িল। তখন তাহাদের (আল্লাহ্ ও রসূলের) মাঝে এক ধনুক অথবা দুই ধনুকের ব্যবধান রহিল। মুহাম্মদ (স.) ও তাঁহার উম্মতের জন্য পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ প্রদান করা হইল। পরবর্তীতে হযরত মূসা (আ.) এর পরামর্শক্রমে, পাঁচবার আবেদন করিবার পর পঞ্চাশ হইতে কমাইয়া পাঁচ ওয়াক্ত করা হইল। ইহার পর তাহাকে জান্নাতের নাজ নেয়ামত ও জাহান্নামের ভয়াবহ আযাবের বিভীষিকা প্রদর্শন করা হইল। ইহার পর ধূলির ধরায় ফিরিয়া আসিলেন। বায়তুল মুকাদ্দাসে সকল নবীদের নিয়া দুই রাকাত নামাজে ইমামতি করিলেন। ইহার পর মক্কায় উম্মেহানীর গৃহে ফিরিয়া আসিলেন। এই ভ্রমণে পথিমধ্যে তাঁহাকে অসংখ্য নিদর্শনাবলী প্রদর্শন করা হইয়াছে। মেরাজ হইতে ফিরিয়া রসূল (স.) বলেন—আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা আমাকে দিয়া মেরাজ করাইয়াছেন। কিন্তু "আস সালাতু মেরাজুল মোমেনীন" নামাজই হইল মোমেনদের জন্য মেরাজ। রসূল (স.) যেমন মেরাজে রাব্বুল আলামীনের সবচাইতে নিকটবর্তী হইয়াছিলেন। তেমনি তাহার উম্মতগণও নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর সবচাইতে নিকটবর্তী হইতে পারিবে। মহিমান্বিত এই রাতে প্রার্থনা করি বিশ্ব মানবের সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধি।
Source: http://www.ittefaq.com.bd/index.php?ref=MjBfMDVfMjZfMTRfMV8zXzFfMTMzMzY4
সেই সময় রসূল (স.) তাঁহার চাচাতো বোন উম্মে হানীর গৃহে নিন্দ্রা ও জাগ্রত অবস্থার মাঝামাঝি পর্যায়ে ছিলেন। তখন তাঁহার একপাশে নিদ্রিত ছিলেন চাচাতো ভাই জাফর, অন্য পাশে ঘুমাইয়াছিলেন প্রাণ প্রিয় চাচা আমীর হামযা (রা.)। এই সময়ে জিব্রাইল (আ.) আসিলেন। বেহেশতি বাহন বোরাকে আরোহণপূর্বক কাবাঘর হইতে তাঁহাকে লইয়া গেলেন মসজিদে আক্সায়। ইহার পর ঊর্ধ্বলোকে যাত্রা করিলেন। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির সীমা ভেদ করিয়া মহাশূন্যালোকের সব স্তর অতিক্রম করিয়া প্রথম আসমানের দরজায় পৌঁছাইলেন। প্রথম আসমানে আল্লাহর প্রিয় সৃষ্টি, প্রথম মানব আবুল বাশার, মানব জাতির পিতা হযরত আদম (আ.) এর সঙ্গে তাঁহার সাক্ষাত্ হইল। ইহার পর দ্বিতীয় আসমানে হযরত ঈসা (আ.) এর সঙ্গে সাক্ষাত্ হইল। তৃতীয় আসমানে হযরত হারুন (আ.) এর সঙ্গে সাক্ষাত্ হইলো। এই ভাবে চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ ও সপ্তম আসমানে যথাক্রমে হযরত ইউসূফ (আ.), হযরত ইদ্রিস (আ.), হযরত মূসা (আ.) ও হযরত ইব্রাহিম (আ.) এর সঙ্গে সাক্ষাত্ হইল। ইহার পর ফেরেশতাদের ইবাদতখানা বায়তুল মামুরে নামাজ পড়িলেন। ইহার পর সৃষ্টি জগতের সীমানা সিদরাতুল মুনতাহায় গিয়া জিব্রাইল (আ.) তাহাকে বিদায় জানাইলেন এবং বলিলেন এইস্থান হইতে একচুল পরিমাণ যদি আমি সম্মুখে অগ্রসর হই তাহা হইলে আল্লাহর নূরের তাজাল্লিতে আমি পুড়িয়া নিঃশেষ হইয়া যাইব। এমতাবস্থায় তাহার পদমোবারকের নিচে স্বর্গীয় বাহন, দ্রুতগতি সম্পন্ন, নরম তুলতুলে কম্বল আকৃতির রফ্রফ্ চলিয়া আসিল। রফ্রফিট হযরত মুহাম্মদ (স.)কে নিয়া দিগন্তবিস্তৃত সাতটি সমতল মাঠ পার হইয়া- আল্লাহর নূরের পর্দা ভেদ করিয়া সুমহান আরশে আজীমের সন্নিকটে গিয়া স্থির হইল। কুরআনুল কারীমের সূরা নজমে বলা হইয়াছে—"সুম্মা দানা ফাতাদাল্লা, ফাকানা কাবা কাওছাইনে আও আদনা" অর্থাত্- অতপর (রফ্রফিট) থামিয়া গেল, এবং ঝুলিয়া পড়িল। তখন তাহাদের (আল্লাহ্ ও রসূলের) মাঝে এক ধনুক অথবা দুই ধনুকের ব্যবধান রহিল। মুহাম্মদ (স.) ও তাঁহার উম্মতের জন্য পঞ্চাশ ওয়াক্ত নামাজ প্রদান করা হইল। পরবর্তীতে হযরত মূসা (আ.) এর পরামর্শক্রমে, পাঁচবার আবেদন করিবার পর পঞ্চাশ হইতে কমাইয়া পাঁচ ওয়াক্ত করা হইল। ইহার পর তাহাকে জান্নাতের নাজ নেয়ামত ও জাহান্নামের ভয়াবহ আযাবের বিভীষিকা প্রদর্শন করা হইল। ইহার পর ধূলির ধরায় ফিরিয়া আসিলেন। বায়তুল মুকাদ্দাসে সকল নবীদের নিয়া দুই রাকাত নামাজে ইমামতি করিলেন। ইহার পর মক্কায় উম্মেহানীর গৃহে ফিরিয়া আসিলেন। এই ভ্রমণে পথিমধ্যে তাঁহাকে অসংখ্য নিদর্শনাবলী প্রদর্শন করা হইয়াছে। মেরাজ হইতে ফিরিয়া রসূল (স.) বলেন—আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়াতায়ালা আমাকে দিয়া মেরাজ করাইয়াছেন। কিন্তু "আস সালাতু মেরাজুল মোমেনীন" নামাজই হইল মোমেনদের জন্য মেরাজ। রসূল (স.) যেমন মেরাজে রাব্বুল আলামীনের সবচাইতে নিকটবর্তী হইয়াছিলেন। তেমনি তাহার উম্মতগণও নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর সবচাইতে নিকটবর্তী হইতে পারিবে। মহিমান্বিত এই রাতে প্রার্থনা করি বিশ্ব মানবের সুখ শান্তি ও সমৃদ্ধি।
Source: http://www.ittefaq.com.bd/index.php?ref=MjBfMDVfMjZfMTRfMV8zXzFfMTMzMzY4
আজ পবিত্র শবে মেরাজ
No comments:
Post a Comment