

কোরআন শরীফ আরবীতে লিখা একটি বিশাল বড় কিতাব, বিশ্বের বেশির ভাগ মানুষের জন্য বিদেশী ভাষা। সেই কারণে খুব অল্প কিছু মানুষ এর বিভিন্ন বিষয়গুলো সঠিক ভাবে বুঝে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আল্লাহ্ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নবী ও রাসূলদের পৃথিবীতে পাঠানো সম্পর্কে। ঐ সব নবী ও রাসূলদের মধ্যে অন্যতম একজন হলেন হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) যাঁর কথা কোরআন শরীফে অনেক কিছু বলা হয়েছে। পৃথিবীর বেশির ভাগ মানুষ হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জীবনী ও কর্ম সম্পর্ক কম-বেশী কথাও শুনেছে। যাই হোক, কোরআন শরীফের বর্ণনা আনুযায়ি তাঁর অনেক ও বিভিন্ন পথের কথা অনেক মানুষ সঠিকভাবে জানে না। সেইজন্য এই পাঠের ব্যবস্থা করা হয়েছে। ছোট এই পাঠটির উদ্দেশ্য হল পাঠককে কোরআন শরীফ আনুসারে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) সম্পর্কে সঠিক ও পরিষ্কারভাবে ধারনা দেওয়া। নিচের উক্তিগুলো সরাসরি ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ হতে প্রকাশিত আল-কুরআনুল করীম থেকে নেওয়া হয়েছে। একজন পাঠক এই বইটি পড়ে নিজে আরো সঠিক ও ভাল ভাবে জানতে সক্ষম হবে, কিভাবে কোরআন শরীফে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কে বর্ণনা করা হয়েছে। তা ছাড়া, যারা আরো জানতে আগ্রহী, তাদেরকে আমরা উৎসাহ দিব তারা যেন কোরআন শরীফের একটা বাংলা তরজমা সংগ্রহ করে নিজে পড়তে শুরু করে।
একজন রাসূল (رَّسُول)
مَّا أَصَابَكَ مِنْ
حَسَنَةٍ فَمِنَ اللّهِ وَمَا أَصَابَكَ مِن سَيِّئَةٍ فَمِن نَّفْسِكَ
وَأَرْسَلْنَاكَ لِلنَّاسِ رَسُولاً وَكَفَى بِاللّهِ شَهِيدًا
কল্যাণ যাহা তোমার হয় তাহা আল্লাহ্র নিকট হইতে এবং অকল্যাণ যাহা তোমার হয়
তাহা তোমার কাজের কারণে এবং তোমাকে মানুষের জন্য রাসূলরূপে প্রেরণ করিয়াছি;
সাক্ষী হিসাবে আল্লাহ্ই যথেষ্ট। (সূরা নিসা ৪:৭৯)
وَمَا مُحَمَّدٌ إِلاَّ رَسُولٌ قَدْ
خَلَتْ مِن قَبْلِهِ الرُّسُلُ أَفَإِن مَّاتَ أَوْ قُتِلَ انقَلَبْتُمْ
عَلَى أَعْقَابِكُمْ وَمَن يَنقَلِبْ عَلَىَ عَقِبَيْهِ فَلَن يَضُرَّ
اللّهَ شَيْئًا وَسَيَجْزِي اللّهُ الشَّاكِرِينَ
মুহাম্মদ একজন
রাসূল মাত্র; তাহার পূর্বে বহু রাসূল গত হইয়াছে। সুতরাং যদি সে মারা যায়
অথবা সে নিহত হয় তবে তোমরা কি পৃষ্ঠপ্রদর্শন করিবে? এবং কেহ পৃষ্ঠপ্রদর্শন
করিলে সে কখনও আল্লাহ্র ক্ষতি করিবে না; বরং আল্লাহ্ শীঘ্রই কৃতজ্ঞদিগকে
পুরস্কৃত করিবেন। (সূরা আলে ইমরান ৩:১৪৪)
أَوْ يَكُونَ لَكَ بَيْتٌ مِّن زُخْرُفٍ
أَوْ تَرْقَى فِي السَّمَاء وَلَن نُّؤْمِنَ لِرُقِيِّكَ حَتَّى تُنَزِّلَ
عَلَيْنَا كِتَابًا نَّقْرَؤُهُ قُلْ سُبْحَانَ رَبِّي هَلْ كُنتُ إَلاَّ
بَشَرًا رَّسُولاً
. . . বল, ‘পবিত্র মহান আমার প্রতিপালক! আমি তো হইতেছি কেবল একজন মানুষ
একজন রাসূল।‘ (সূরা বনী ইসরাঈল ১৭:৯৩)
مُّحَمَّدٌ رَّسُولُ اللَّهِ
মুহাম্মদ আল্লাহ্র রাসূল। (সূরা আল-ফাত্হ্ ৪৮:২৯)
রাসূলের দায়িত্বঃ
مَّا عَلَى الرَّسُولِ إِلاَّ الْبَلاَغُ وَاللّهُ يَعْلَمُ مَا تُبْدُونَ وَمَا تَكْتُمُونَ
প্রচার
করাই কেবল রাসূলের কর্তব্য। আর তোমরা যাহা প্রকাশ কর ও গোপন রাখ আল্লাহ্
তাহা জানেন। (সূরা মায়িদা ৫:৯৯)
قُلْ أَطِيعُوا اللَّهَ
وَأَطِيعُوا الرَّسُولَ فَإِن تَوَلَّوا فَإِنَّمَا عَلَيْهِ مَا حُمِّلَ
وَعَلَيْكُم مَّا حُمِّلْتُمْ وَإِن تُطِيعُوهُ تَهْتَدُوا وَمَا عَلَى
الرَّسُولِ إِلَّا الْبَلَاغُ الْمُبِينُ
বল, ‘আল্লাহ্র আনুগত্য
কর এবং রাসূলের আনুগত্য কর।‘ অত:পর যদি তোমরা মুখ ফিরাইয়া লও, তবে তাহার
উপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য সেই দায়ী এবং তোমাদের উপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য
তোমরাই দায়ী; এবং তোমরা তাহার আনুগত্য করিলে সৎপথ পাইবে, আর রাসূলের কাজ
তো কেবল স্পষ্টভাবে পৌছাইয়া দেওয়া।
(সূরা নূর ২৪:৫৪)
وَقَالَ الَّذِينَ أَشْرَكُواْ لَوْ شَاء
اللّهُ مَا عَبَدْنَا مِن دُونِهِ مِن شَيْءٍ نَّحْنُ وَلا آبَاؤُنَا وَلاَ
حَرَّمْنَا مِن دُونِهِ مِن شَيْءٍ كَذَلِكَ فَعَلَ الَّذِينَ مِن
قَبْلِهِمْ فَهَلْ عَلَى الرُّسُلِ إِلاَّ الْبَلاغُ الْمُبِينُ
মূশরিকরা
বলিবে, “আল্লাহ্ ইচ্ছা করিলে আমাদের পিতৃপুরুষেরা ও আমরা তাঁহাকে ব্যতীত
অপর কোন কিছূর ইবাদত করিতাম না এবং তাঁহার অনুজ্ঞা ব্যতীত আমরা কোন কিছু
নিষিদ্ধ করিতাম না।” উহাদের পূর্ববর্তীরা এইরুপই করিত। রাসূলদের কর্তব্য তো
কেবল সূস্পষ্ট বাণী পৌছাইয়া দেওয়া। (সূরা নাহল ১৬:৩৫)
وَإِن تُكَذِّبُوا فَقَدْ كَذَّبَ أُمَمٌ مِّن قَبْلِكُمْ وَمَا عَلَى الرَّسُولِ إِلَّا الْبَلَاغُ الْمُبِينُ
তোমরা
যদি অস্বীকার কর তবে তো তোমাদের পূর্ববর্তীরাও মিথ্যাবাদী বলিয়াছিল।
সুস্পষ্টভাবে প্রচার করিয়া দেওয়া ব্যতীত রাসূলের আর কোন দায়িত্ব নাই।
(সূরা আনকাবূত
২৯:১৮)
فَإِنْ أَعْرَضُوا
فَمَا أَرْسَلْنَاكَ عَلَيْهِمْ حَفِيظًا إِنْ عَلَيْكَ إِلَّا الْبَلَاغُ
وَإِنَّا إِذَا أَذَقْنَا الْإِنسَانَ مِنَّا رَحْمَةً فَرِحَ بِهَا وَإِن
تُصِبْهُمْ سَيِّئَةٌ بِمَا قَدَّمَتْ أَيْدِيهِمْ فَإِنَّ الْإِنسَانَ
كَفُورٌ
উহারা যদি মুখ ফিরাইয়া লয়, তবে তোমাকে তো আমি ইহাদের রক্ষক করিয়া পাঠাই
নাই। তোমার কাজ তো কেবল বাণী পৌছাইয়া দেওয়া।. . . (সূরা শূরা ৪২:৪৮)
একজন উপদেশদাতা
فَذَكِّرْ إِنَّمَا أَنتَ مُذَكِّرٌ
অতএব তুমি উপদেশ দাও; তুমি তো একজন উপদেশদাতা। (সূরা রাশিয়া ৮৮:২১)
'শুধু আমাদের মত একজন মানুষ'
قُلْ إِنَّمَا أَنَا
بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ يُوحَى إِلَيَّ أَنَّمَا إِلَهُكُمْ إِلَهٌ وَاحِدٌ
فَمَن كَانَ يَرْجُو لِقَاء رَبِّهِ فَلْيَعْمَلْ عَمَلًا صَالِحًا وَلَا
يُشْرِكْ بِعِبَادَةِ رَبِّهِ أَحَدًا
বল, ‘আমি তো তোমাদের মত একজন মানুষই, আমার প্রতি প্রত্যাদেশ হয় যে, তোমাদের
ইলাহ্ একমাত্র ইলাহ্। সুতরাং যে তাহার প্রতিপালকের সাক্ষাত কামনা করে,
সে যেন সৎকর্ম করে ও তাহার প্রতিপালকের ইবাদতে কাহাকেও শরীক না করে।
(সূরা কাহ্ফ ১৮:১১০)
قُلْ إِنَّمَا أَنَا
بَشَرٌ مِّثْلُكُمْ يُوحَى إِلَيَّ أَنَّمَا إِلَهُكُمْ إِلَهٌ وَاحِدٌ
فَاسْتَقِيمُوا إِلَيْهِ وَاسْتَغْفِرُوهُ وَوَيْلٌ لِّلْمُشْرِكِينَ
বল, ‘আমি তো তোমাদের মত একজন মানুষই, আমার প্রতি ওহী হয় যে, তোমাদের ইলাহ্
একমাত্র ইলাহ্। অতএব তোমরা তাঁহারই পথ দৃঢ়ভাবে অবলম্বন কর এবং তাঁহারই
নিকট ক্ষমা প্রার্থনা কর। দুর্ভোগ অংশীবাদীদের জন্য।
(সূরা হা-মীম আস্-সাজ্দাঃ ৪১:৬)
আরব জাতির কাছে পাঠানো
كَذَلِكَ أَرْسَلْنَاكَ
فِي أُمَّةٍ قَدْ خَلَتْ مِن قَبْلِهَا أُمَمٌ لِّتَتْلُوَ عَلَيْهِمُ
الَّذِيَ أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ وَهُمْ يَكْفُرُونَ بِالرَّحْمَـنِ قُلْ
هُوَ رَبِّي لا إِلَـهَ إِلاَّ هُوَ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَإِلَيْهِ
مَتَابِ
এইভাবে আমি তোমাকে পাঠাইয়াছি এক জাতির প্রতি যাহার
পূর্বে বহু জাতি গত হইয়াছে, উহাদের নিকট তিলাওয়াত করিবার জন্য, যাহা আমি
তোমার প্রতি প্রত্যাদেশ করিয়াছি। তথাপি উহারা দয়াময়কে অস্বীকার করে। বল,
‘তিনিই আমার প্রতিপালক; তিনি ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ্ নাই। তাঁহার উপর আমি
নির্ভর করি এবং আমার প্রত্যাবর্তন তাঁহারই নিকট। (সূরা
রা’দ ১৩:৩০)
وَإِنَّهُ لَذِكْرٌ لَّكَ وَلِقَوْمِكَ وَسَوْفَ تُسْأَلُونَ
কুরআন
তো তোমার ও তোমার সমপ্রদায়ের জন্য সম্মানের বস্তু; তোমাদিগকে অবশ্যই এ
বিষয়ে প্রশ্ন করা হইবে। (সূরা যুখ্রুফ ৪৩:৪৪)
هُوَ الَّذِي بَعَثَ
فِي الْأُمِّيِّينَ رَسُولًا مِّنْهُمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آيَاتِهِ
وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَإِن كَانُوا
مِن قَبْلُ لَفِي ضَلَالٍ مُّبِينٍ
তিনিই উম্মীদের মধ্যে একজন
রাসূল পাঠাইয়াছেন তাহাদের মধ্য হইতে, যে তাহাদের নিকট আবৃতি করে তাঁহার
আয়াতসমূহ; তাহাদিগকে পবিত্র করে এবং শিক্ষা দেয় কিতাব ও হিকমত; ইতিপূর্বে
তো উহারা ছিল ঘোর বিভ্রান্তিতে। (সূরা জুমু’আ ৬২:২)
সব মানুষের কাছে পাঠানোঃ
وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا كَافَّةً لِّلنَّاسِ بَشِيرًا وَنَذِيرًا وَلَكِنَّ أَكْثَرَ النَّاسِ لَا يَعْلَمُونَ
আমি
তো তোমাকে সমগ্র মানবজাতির প্রতি সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরণ
করিয়াছি; কিন্তু অধিকাংশ মানুষ জানে না। (৩৪:২৮ সূরা
সাবা)
একজন সতর্ককারী ও সুসংবাদদাতা
أَلاَّ تَعْبُدُواْ إِلاَّ اللّهَ إِنَّنِي لَكُم مِّنْهُ نَذِيرٌ وَبَشِيرٌ
তোমরা
আল্লাহ্ ব্যাতীত অন্যের ইবাদত করিবে না, অবশ্যই আমি তাঁহার পক্ষ হইতে
তোমাদের জন্য সতর্ককারী ও সুসংবাদদাতা। (সূরা হূদ ১১:২)
وَبِالْحَقِّ أَنزَلْنَاهُ وَبِالْحَقِّ نَزَلَ وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلاَّ مُبَشِّرًا وَنَذِيرًا
আমি
সত্য-সহই কুরআন অবতীর্ণ করিয়াছি এবং উহা সত্য-সহই অবতীর্ণ হইয়াছে। আমি তো
তোমাকে কেবল সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে প্রেরণ করিয়াছি।
(সূরা বনী ইসরাঈল ১৭:১০৫)
قُلْ يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّمَا أَنَا لَكُمْ نَذِيرٌ مُّبِينٌ
বল, ‘হে মানুষ আমি তো তোমাদের জন্য এক সুস্পষ্ট সতর্ককারী।' (সূরা হাজ্জ ২২:৪৯)
وَأَنْ أَتْلُوَ
الْقُرْآنَ فَمَنِ اهْتَدَى فَإِنَّمَا يَهْتَدِي لِنَفْسِهِ وَمَن ضَلَّ
فَقُلْ إِنَّمَا أَنَا مِنَ الْمُنذِرِينَ
আমি আরও আদিষ্ট হইয়াছি, কুরআন তিলাওয়াত করিতে; অতএব যে ব্যক্তি সৎপথ অনুসরণ
করে, সে সৎপথ অনুসরণ করে নিজেরই কল্যাণের জন্য। আর কেহ ভ্রান্তপথ অবলম্বন
করিলে তুমি বলিও, ‘আমি তো কেবল সতর্ককারীদের মধ্যেই একজন।’
(সূরা নামল ২৭:৯২)
إِنْ أَنتَ إِلَّا نَذِيرٌ إِنَّا أَرْسَلْنَاكَ بِالْحَقِّ بَشِيرًا وَنَذِيرًا وَإِن مِّنْ أُمَّةٍ إِلَّا خلَا فِيهَا نَذِيرٌ
তুমি একজন সতর্ককারী মাত্র। আমি তো তোমাকে সত্যসহ প্রেরণ করিয়াছি
সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে; এমন কোন সম্প্রদায় নাই যাহার নিকট সতর্ককারী
প্রেরিত হয় নাই। (সূরা ফাতির ৩৫:২৩-২৪)
قُلْ إِنَّمَا أَنَا مُنذِرٌ وَمَا مِنْ إِلَهٍ إِلَّا اللَّهُ الْوَاحِدُ الْقَهَّارُ
বল,
‘আমি তো একজন সতর্ককারী মাত্র এবং কোন ইলাহ্ নাই আল্লাহ্ ব্যতীত, যিনি
এক, যিনি প্রবল প্রতাপশালী।’ (সূরা সাদ ৩৮:৬৫)
إِنَّا أَرْسَلْنَاكَ شَاهِدًا وَمُبَشِّرًا وَنَذِيرًا
আমি তোমাকে প্রেরণ করিয়াছি সাক্ষীরূপে, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে। (সূরা ফাত্হ্ ৪৮:৮)
فَفِرُّوا إِلَى اللَّهِ إِنِّي لَكُم مِّنْهُ نَذِيرٌ مُّبِينٌ
অতএব তোমরা আল্লাহ্র দিকে ধাবিত হও, আমি তোমাদের প্রতি আল্লাহ্ প্রেরিত স্পষ্ট সতর্ককারী। (সূরা যারিয়াত ৫১:৫০)
قُلْ إِنَّمَا الْعِلْمُ عِندَ اللَّهِ وَإِنَّمَا أَنَا نَذِيرٌ مُّبِينٌ
বল, ‘ইহার জ্ঞান কেবল আল্লাহ্রই নিকট আছে, আমি তো স্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র।’ (সূরা মূল্ক ৬৭:২৬)
অন্যদের উপর ভালমন্দের অধিকার নাই
قُل لاَّ أَمْلِكُ
لِنَفْسِي ضَرًّا وَلاَ نَفْعًا إِلاَّ مَا شَاء اللّهُ لِكُلِّ أُمَّةٍ
أَجَلٌ إِذَا جَاء أَجَلُهُمْ فَلاَ يَسْتَأْخِرُونَ سَاعَةً وَلاَ
يَسْتَقْدِمُونَ
বল, ‘আল্লাহ্ যাহা ইচ্ছা করেন তাহা ব্যতীত আমার নিজের ভালমন্দের উপর আমার কোন অধিকার নাই।’ (সূরা হূদ ১০:৪৯)
وَأَنْ أَتْلُوَ
الْقُرْآنَ فَمَنِ اهْتَدَى فَإِنَّمَا يَهْتَدِي لِنَفْسِهِ وَمَن ضَلَّ
فَقُلْ إِنَّمَا أَنَا مِنَ الْمُنذِرِينَ
আমি আরও আদিষ্ট হইয়াছি, কুরআন তিলাওয়াত করিতে; অতএব যে ব্যক্তি সৎপথ অনুসরণ
করে, সে সৎপথ অনুসরণ করে নিজেরই কল্যাণের জন্য। আর কেহ ভ্রান্তপথ অবলম্বন
করিলে তুমি বলিও, ‘আমি তো কেবল সতর্ককারীদের মধ্যেই একজন।’
(সূরা নামল ২৭:৯২)
إِنَّا أَنزَلْنَا
عَلَيْكَ الْكِتَابَ لِلنَّاسِ بِالْحَقِّ فَمَنِ اهْتَدَى فَلِنَفْسِهِ
وَمَن ضَلَّ فَإِنَّمَا يَضِلُّ عَلَيْهَا وَمَا أَنتَ عَلَيْهِم
بِوَكِيلٍ
আমি তোমার প্রতি সত্যসহ কিতাব অবতীর্ণ করিয়াছি মানুষের জন্য; অত:পর যে সৎপথ
অবলম্বন করে সে তাহা করে নিজেরই কল্যাণের জন্য এবং সে বিপথগামী হয় সে তো
বিপথগামী হয় নিজেরই ধ্বংসের জন্য এবং তুমি উহাদের তত্ত্বাবধায়ক নহ।
(সূরা যুমার ৩৯:৪১)
فَإِنْ أَعْرَضُوا
فَمَا أَرْسَلْنَاكَ عَلَيْهِمْ حَفِيظًا إِنْ عَلَيْكَ إِلَّا الْبَلَاغُ
وَإِنَّا إِذَا أَذَقْنَا الْإِنسَانَ مِنَّا رَحْمَةً فَرِحَ بِهَا وَإِن
تُصِبْهُمْ سَيِّئَةٌ بِمَا قَدَّمَتْ أَيْدِيهِمْ فَإِنَّ الْإِنسَانَ
كَفُورٌ
উহারা যদি মুখ ফিরাইয়া লয়, তবে তোমাকে তো আমি ইহাদের রক্ষক করিয়া পাঠাই
নাই। তোমার কাজ তো কেবল বাণী পৌছাইয়া দেওয়া। . . . (সূরা শূরা
৪২:৪৮)
قُلْ إِنِّي لَا أَمْلِكُ لَكُمْ ضَرًّا وَلَا رَشَدًا
قُلْ إِنِّي لَن يُجِيرَنِي مِنَ اللَّهِ أَحَدٌ وَلَنْ أَجِدَ مِن دُونِهِ مُلْتَحَدًا
إِلَّا
إِلَّا بَلَاغًا مِّنَ اللَّهِ وَرِسَالَاتِهِ وَمَن يَعْصِ اللَّهَ
وَرَسُولَهُ فَإِنَّ لَهُ نَارَ جَهَنَّمَ خَالِدِينَ فِيهَا أَبَدًا
বল, ‘আমি তোমাদেরই ইষ্ট-অনিষ্টের মালিক নহি।‘ বল, ‘আল্লাহ্র শাস্তি হইতে
কেহই আমাকে রক্ষা করিতে পারিবে না এবং আল্লাহ্ ব্যতীত আমি কোন আশ্রয়ও পাইব
না, কেবল আল্লাহ্র পক্ষ হইতে পৌছান এবং তাঁহার বাণী প্রচারই আমার
দায়িত্ব। যাহারা আল্লাহ্ ও তাঁহার রাসূলকে অমান্য করে তাহাদের জন্য
রহিয়াছে জাহান্নামের অগ্নি, সেথায় তাহারা চিরস্থায়ী হইবে।’
(সূরা জিন ৭২:২১-২৩)
নিজ ব্যাপার সম্পর্ক জ্ঞান
قُلْ مَا كُنتُ بِدْعًا
مِّنْ الرُّسُلِ وَمَا أَدْرِي مَا يُفْعَلُ بِي وَلَا بِكُمْ إِنْ
أَتَّبِعُ إِلَّا مَا يُوحَى إِلَيَّ وَمَا أَنَا إِلَّا نَذِيرٌ مُّبِينٌ
বল, ‘আমি কোন নূতন রাসূল নহি। আমি জানি না, আমার ও তোমাদের ব্যাপারে কী করা
হইবে; আমি আমার প্রতি যাহা ওহী করা হয় কেবল তাহারই অনুসরণ করি। আর আমি তো
এক স্পষ্ট সতর্ককারী মাত্র।’ (সূরা আহ্কাফ ৪৬:৯)
অদৃশ্য সম্পর্ক জ্ঞান
قُل لاَّ أَقُولُ
لَكُمْ عِندِي خَزَآئِنُ اللّهِ وَلا أَعْلَمُ الْغَيْبَ وَلا أَقُولُ
لَكُمْ إِنِّي مَلَكٌ إِنْ أَتَّبِعُ إِلاَّ مَا يُوحَى إِلَيَّ قُلْ هَلْ
يَسْتَوِي الأَعْمَى وَالْبَصِيرُ أَفَلاَ تَتَفَكَّرُونَ
বল, ‘আমি তোমাদিগকে ইহা বলি না যে, আমার নিকট আল্লাহ্র ধনভান্ডার আছে,
অদৃশ্য সম্বন্ধে আমি অবগত নহি; এবং তোমাদিগকে ইহাও বলি না যে, আমি
ফিরিশ্তা, আমার প্রতি যাহা ওহী হয় আমি শুধু তাহারই অনুসরণ করি। বল, ‘অন্ধ ও
চক্ষুস্মান কি সমান? তোমরা কি অনুধাবন কর না? (সূরা আন্’আম ৬:৫০)
قُل لاَّ أَمْلِكُ لِنَفْسِي نَفْعًا وَلاَ
ضَرًّا إِلاَّ مَا شَاء اللّهُ وَلَوْ كُنتُ أَعْلَمُ الْغَيْبَ
لاَسْتَكْثَرْتُ مِنَ الْخَيْرِ وَمَا مَسَّنِيَ السُّوءُ إِنْ أَنَاْ
إِلاَّ نَذِيرٌ وَبَشِيرٌ لِّقَوْمٍ يُؤْمِنُونَ
বল, ‘আল্লাহ্ যাহা ইচ্ছা করেন তাহা ব্যতীত আমার নিজের ভাল-মন্দের উপরও
আমার কোন অধিকার নাই। আমি যদি অদৃশ্যের খবর জানিতাম তবে তো আমি প্রভূত
কল্যাণই লাভ করিতাম এবং কোন অকল্যাণই আমাকে স্পর্শ করিত না। আমি তো শুধু
মুমিন সমপ্রদায়ের জন্য সতর্ককারী ও সুসংবাদদাতা বৈ আর কিছুই নই।
(সূরা আ’রাফ ৭:১৮৮)
নিজ ত্রুটির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা
فَاصْبِرْ إِنَّ وَعْدَ اللَّهِ حَقٌّ وَاسْتَغْفِرْ لِذَنبِكَ وَسَبِّحْ بِحَمْدِ رَبِّكَ بِالْعَشِيِّ وَالْإِبْكَارِ
অতএব তুমি ধৈর্যধারণ কর; নিশ্চয়ই আল্লাহ্র প্রতিশ্রুতি সত্য, তুমি তোমার
ত্রু টির জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর এবং তোমার প্রতিপালকের সপ্রশংস পবিত্রতা ও
মহিমা ঘোষণা কর সকাল ও সন্ধ্যায়। (সূরা মু’মিন
৪০:৫৫)
فَاعْلَمْ أَنَّهُ لَا
إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَاسْتَغْفِرْ لِذَنبِكَ وَلِلْمُؤْمِنِينَ
وَالْمُؤْمِنَاتِ وَاللَّهُ يَعْلَمُ مُتَقَلَّبَكُمْ وَمَثْوَاكُمْ
সুতরাং জানিয়া রাখ, আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কোন ইলাহ্ নাই, ক্ষমা প্রার্থনা
কর তোমার এবং মু’মিন নরনারীদের ত্রু টির জন্য। আল্লাহ্ তোমাদের গতিবিধি
এবং অবস্থান সম্বন্ধে সম্যক অবগত আছেন। (সূরা
মুহাম্মদ ৪৭:১৯)
إِنَّا فَتَحْنَا لَكَ
فَتْحًا مُّبِينًا لِيَغْفِرَ لَكَ اللَّهُ مَا تَقَدَّمَ مِن ذَنبِكَ
وَمَا تَأَخَّرَ وَيُتِمَّ نِعْمَتَهُ عَلَيْكَ وَيَهْدِيَكَ صِرَاطًا
مُّسْتَقِيمًا
নিশ্চয়ই আমি তোমাকে দিয়াছি সুস্পষ্ট বিজয়, যেন আল্লাহ্ তোমার অতীত ও
ভবিষ্যত ত্রু টিসমূহ মার্জনা করেন এবং তোমার প্রতি তাঁহার অনুগ্রহ পূর্ণ
করেন ও তোমাকে সরল পথে পরিচালিত করেন। (সূরা
ফাত্হ্ ৪৮:১-২)
অবাধ্যদের প্রতি তাঁর দায়িত্ব
أَفَمَنْ حَقَّ عَلَيْهِ كَلِمَةُ الْعَذَابِ أَفَأَنتَ تُنقِذُ مَن فِي النَّارِ
যাহার উপর দন্ডাদেশ অবধারিত হইয়াছে; তুমি কি রক্ষা করিতে পারিবে সেই
ব্যক্তিকে, যে জাহান্নামে আছে? (সূরা
যুমার ৩৯:১৯)
فَإِنْ أَعْرَضُوا
فَمَا أَرْسَلْنَاكَ عَلَيْهِمْ حَفِيظًا إِنْ عَلَيْكَ إِلَّا الْبَلَاغُ
وَإِنَّا إِذَا أَذَقْنَا الْإِنسَانَ مِنَّا رَحْمَةً فَرِحَ بِهَا وَإِن
تُصِبْهُمْ سَيِّئَةٌ بِمَا قَدَّمَتْ أَيْدِيهِمْ فَإِنَّ الْإِنسَانَ
كَفُورٌ
উহারা যদি মুখ ফিরাইয়া লয়, তবে তোমাকে তো আমি ইহাদের রক্ষক করিয়া পাঠাই
নাই। তোমার কাজ তো কেবল বাণী পৌছাইয়া দেওয়া। . . (সূরা শূরা ৪২:৪৮)
হযরত ইবরাহীমের ধর্ম আনুসরণ করেন
ثُمَّ أَوْحَيْنَا إِلَيْكَ أَنِ اتَّبِعْ مِلَّةَ إِبْرَاهِيمَ حَنِيفًا وَمَا كَانَ مِنَ الْمُشْرِكِينَ
এখন আমি তোমাদের প্রতি প্রত্যাদেশ করিলাম, ‘তুমি একনিষ্ঠ ইবরাহীমের
ধর্মাদর্শ অনুসরণ কর; এবং সে মুশরিকদের অন্তর্ভূক্ত ছিল না। (সূরা নাহ্ল
১৬:১২৩)
সব কিতাবের উপর বিশ্বাসী
وَلَا تُجَادِلُوا
أَهْلَ الْكِتَابِ إِلَّا بِالَّتِي هِيَ أَحْسَنُ إِلَّا الَّذِينَ
ظَلَمُوا مِنْهُمْ وَقُولُوا آمَنَّا بِالَّذِي أُنزِلَ إِلَيْنَا
وَأُنزِلَ إِلَيْكُمْ وَإِلَهُنَا وَإِلَهُكُمْ وَاحِدٌ وَنَحْنُ لَهُ
مُسْلِمُونَ
তোমরা উত্তম পন্থা ব্যতীত কিতাবীদের সহিত বিতর্ক করিবে না, তবে তাহাদের
সহিত করিতে পার, যাহারা উহাদের মধ্যে সীমালংঘনকারী। এবং বল, ‘আমাদের প্রতি ও
তোমাদের প্রতি যাহা অবতীর্ণ হইয়াছে, তাহাতে আমরা বিশ্বাস করি এবং আমাদের
ইলাহ্ ও তোমাদের ইলাহ্ তো একই এবং আমরা তাঁহারই প্রতি আত্মসমর্পণকারী।
(সূরা আনকাবূত ২৯:৪৬)
শেষ নবী
مَّا كَانَ مُحَمَّدٌ
أَبَا أَحَدٍ مِّن رِّجَالِكُمْ وَلَكِن رَّسُولَ اللَّهِ وَخَاتَمَ
النَّبِيِّينَ وَكَانَ اللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمًا
মুহাম্মদ তোমাদের মধ্যে কোন পুরুষের পিতা নহে; বরং সে আল্লাহ্র রাসূল এবং
শেষ নবী । আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে সর্বজ্ঞ। (সূরা আহযাব
৩৩:৪০)
সুপারিশ সম্পর্কে
وَاتَّقُواْ يَوْماً
لاَّ تَجْزِي نَفْسٌ عَن نَّفْسٍ شَيْئاً وَلاَ يُقْبَلُ مِنْهَا شَفَاعَةٌ
وَلاَ يُؤْخَذُ مِنْهَا عَدْلٌ وَلاَ هُمْ يُنصَرُونَ
“তোমরা সেই দিনকে ভয় কর যেদিন কেহ কাহারো কোন কাজে আসিবে না, কাহারো
সুপারিশ গ্রহণ করা হইবে না, কাহারো নিকট হইতে বিনিময় গৃহীত হইবে না এবং
তাহারা কোন প্রকার সাহায্যপ্রাপ্তও হইবে না।” (সুরা বাকারা ২:৪৮)
اسْتَغْفِرْ لَهُمْ أَوْ لاَ تَسْتَغْفِرْ
لَهُمْ إِن تَسْتَغْفِرْ لَهُمْ سَبْعِينَ مَرَّةً فَلَن يَغْفِرَ اللّهُ
لَهُمْ ذَلِكَ بِأَنَّهُمْ كَفَرُواْ بِاللّهِ وَرَسُولِهِ وَاللّهُ لاَ
يَهْدِي الْقَوْمَ الْفَاسِقِينَ
“তুমি উহাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর অথবা উহাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা না
কর একই কথা; তুমি সত্তর বার উহাদের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করিলেও আল্লাহ্
উহাদিগকে কখনই ক্ষমা করিবেন না। ইহা এইজন্য যে, উহারা আল্লাহ্ ও তাঁহার
রাসূলের সহিত কুফরী করিয়াছে। আল্লাহ্ পাপাচারী সম্প্রদায়কে পথপ্রকর্শন
করেন না।” (সূরা তাওবা ৯:৮০)
No comments:
Post a Comment